মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

আলম তালুকদার স্মরণ সংংখ্যা ২০২০

আলম তালুকদার স্মরণ সংংখ্যা ২০২০

আলম তালুকদার স্মরণ সংংখ্যা ২০২০ ।। সম্পাদক : জাকির আহমদ ।। প্রকাশক : শাকিলা পারভীন

বিদায় ছড়াবন্ধু আলম তালুকদার
লুৎফর রহমান রিটন

আমি কখনোই তাঁকে মন খারাপ করে থাকতে দেখিনি। সারাক্ষণ হাসতে পারতেন মানুষটা। তাঁর কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে উঠতো তাঁর হাসিমুখটা। তিনি আলম তালুকদার। কিছুকাল আগে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব। আমার ছড়াবন্ধু। মুখে মুখে ছড়া বানাতেন। কয়েক ঘন্টা আগে চলে গেলেন তিনি। করোনা তাঁকে কেড়ে নিয়েছে।
নিয়মিতই কথা হতো তাঁর সঙ্গে, টেলিফোনে। আমার কল পেলেই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতেন আলম ভাই। আমি তাঁকে সম্বোধন করতাম ছড়ার তালুকদার বলে। তিনি বলতেন ছড়াসম্রাট। আমি হাসতাম–ধুর্মিয়া! তিনি বলতেন–ভাই, আমি একজন আমলা। আমার কলিগ কিংবা উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের, ইউএনও, ডিসি কিংবা সচিবদের যখনই আমার লেখা ছড়ার বই প্রেজেন্ট করতে গেছি খুশি হয়ে তাঁরা অধিকাংশই বলেছেন আপনার কথা। বলেছেন–লুৎফর রহমান রিটনের ছড়া পড়েছেন? আমি হাসতে হাসতে বলেছি–আমার বন্ধু স্যার। তাঁদের কারো সঙ্গেই আপনার এমনকি ব্যক্তিগত পরিচয়ও নেই। আমি আপনাকে নিয়ে খুবই প্রাউড ফিল করি।
একবার কানাডায় আমাকে ফোন করলেন মধ্যরাতে–ভাই, আমি এখন টাঙ্গাইলে একটা অনুষ্ঠানে। বাচ্চাদের অনুষ্ঠান। আমি প্রধান অতিথি। কিন্তু বাচ্চারা তো খালি আপনের ছড়া পড়তাছে হেহ হেহ হেহ। কই যাই!
আলম তালুকদার ছিলেন ছড়াঅন্তপ্রাণ। আমার যে কোনো সাফল্যে আনন্দিত হতেন। বলতেন, আপনার সাফল্য মানে তো আমাদেরও সাফল্য। আমরা অনেক জায়গায় পৌঁছাতে পারি না। কিন্তু আপনি পারেন। আপ্নারে দেখলে শান্তি লাগে। মনে হয় অন্তত একজন আছে আমাদের ছড়ার জগতে, শিশুসাহিত্যের জগতে যাঁর ব্যক্তিত্ব আছে, গ্রহণযোগ্যতা আছে সর্বত্র। আপনে আমাদের এম্বাসেডার।
আমি তাঁর এরকম ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি বরাবরই। খালি আফসোস করতেন, আপনে দেশে নাই। আপ্নের দেশে থাকাটা খুব জরুরি ছিলো।
বাংলাদেশে টেলিফোনে আমার সবচে বেশি কথা হতো আলম তালুকদারের সঙ্গে।
তিনি কখনোই কারো বিরুদ্ধে আড়ালে কিছু বলতেন না। কারো পেছনে লাগতেন না। জীবনে একবার শুধু একবার দীর্ঘ সময় ধরে বিশেষ একজন সম্পর্কে আমাকে বলেছেন কিছু গভীর গোপন কথা। বলেছেন ওরা আপনার ইমেজ ধ্বংস করতে চায়। ওরা আপনার বন্ধুবেশী শত্রু। আপনার প্রতি চরম ঈর্ষাকাতর। পদবী আর টাকার শক্তির জোরে ওরা আপনের ক্ষতি করতে চায়। আপ্নের প্রতিভাই আপ্নের শত্রু ভাই। কিন্তু আপনে দমবেন না। চালাইয়া যান। আপ্নের সঙ্গে পাঠক আছে। ওদের সেটা নাই। ওরা নিজের বই নিজেরা কিনে। আপ্নেরটা কিনে পাঠকেরা। দিনশেষে ওরা পরাজিত হবেই।
প্রিয় আলম ভাই, প্রিয় ছড়াবন্ধু, আপনার মতো একজন বন্ধুকে হারিয়ে আমি ভীষণ একাকিত্ব অনুভব করছি। আপনি আমার সত্যিকারের শুভাকাঙ্খী ছিলেন। আপনার মতো একজন দেশপ্রেমিক মুজিবপ্রেমী মুক্তিযোদ্ধা বন্ধু থাকাটাও গৌরবের। ভাগ্যের। আমার প্রতি আপনার শর্তহীন ভালোবাসার কথা কোনোদিন ভুলবো না।
কানাডা সময় সকাল আটটায় ঘুম ভাঙতেই মোবাইল অন করে দেখি স্ক্রিনে কার যেনো একটা পোস্ট ভেসে উঠলো আপনার ছবিসহ–আলম তালুকদার আর নেই।
আমার বুকটা কেঁপে উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে ফোন এলো মাযহারের–শুনছো নাকি আলম তালুকদার মারা গেছে। খানিক পরেই চট্টগ্রাম থেকে উৎপলকান্তি বড়ুয়ার কল। আপনার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেললো উৎপল। আপনি নাকি খুব ভালো মানুষ ছিলেন আলম ভাই।
ঝাপসা চোখে ল্যাপটপ অন করে আপনার সঙ্গে স্মৃতি হাতড়াতে হাতড়াতে একটা ছবিতে এসে থেমে গেলাম। স্ক্রিনজুড়ে এনলার্জ করে এখন আমি আপনার সঙ্গে আমার ছবিটা দেখছি।
এই ছবিটা তেইশ বছর আগের, ১৯৯৭ সালের। শাহবাগ আজিজ মার্কেটের তিনতলায় আমার ছোটদের কাগজের অফিস। এক প্রশান্ত বিকেলে সেখান থেকে নিচে নামতেই পান খাওয়া লাল মুখে হাত বাড়িয়ে দিলেন আপনি–আরে কই যান? আমি তো আইলাম আপ্নের কাছে!
আমি বললাম, একটা জরুরি কাজ আছে বাসায়। এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় যেতে হবে। আপনি আমাকে রিকশা নিতে দিলেন না। বললেন–চলেন ছড়াকার আপ্নেরে বাটা সিগনাল পর্যন্ত আগাইয়া দিয়া আসি হাঁটতে হাঁটতে। সেদিনও আপনি খুবই উচ্ছ্বল ছিলেন কিন্তু সেটা বরাবরের চাইতে খানিকটা বেশিই ছিলো।
বাটা সিগনাল মোড়ে আমি বাঁয়ে টার্ণ নেবো। কিন্তু তার আগেই আপনি বললেন, আসেন ছড়াকার আপ্নের সাথে একটা ছবি তুলি। আমরা তখন ফুজি কালার স্টুডিওর সামনে। আমার কিছুটা তাড়া থাকলেও আপনার ভালোবাসার কাছে তাড়াটা পরাজিত হলো। আপনার সঙ্গে ফুজিকালার স্টুডিওতে পাশাপাশি বসে মফস্বল মার্কা বেকায়দা একটা পোজে একটা ছবি তুললাম। যদিও আমি বলেছিলাম, আমার কোনো আলোকচিত্রি বন্ধুকে দিয়ে তুলতে পারতাম আলম ভাই। আপনি বলেছিলেন–কেনো জানি আমার আজকেই তুলতে মন চাইলো। ছড়াকার আপ্নের সঙ্গে আমার একটা ঘনিষ্ঠ ছবি থাকা দরকার। আজকেই তুইলা রাখলাম। একদিন কাজে দিবো।
দু’দিন পরে আমার অফিসে এসে মহা উৎফুল্ল আপনি সেই ছবির একটা কপি আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন–দেখেন দেখেন কী সুন্দর একটা ছবি। রাইখ্যা দেন। একদিন কাজে দিবো।
প্রিয় আলম ভাই, আপনার সঙ্গে আমার সেই ছবিটা যে তেইশ বছর পরে এভাবে ‘কাজে দিবো’ সেটা কি ঘূণাক্ষরেও ভেবেছিলাম! আমার অশ্রুসজল চোখ আপনাকে বিদায় জানাতে গিয়ে অদম্য আকুলতায় আরো বেশি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।
ভালো থাকবেন ছড়াবন্ধু…

আলম তালুকদার: যার ছড়া পড়লে ঘুমেও হাসতে হতো
ফারুক হোসেন

সুকুমার রায়ের হাসির ছড়া বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ সম্পদ। বয়স নির্বিশেষে সবাই তার হাস্যরস ছড়ার ভক্ত। তার ছড়া পড়লে ঠিক বোঝা যাবে সুকুমার রায় সম্ভবত উঠতে বসতে ছড়া কাটতেন। আর তাতে নানারকমের ব্যঙ্গ ভঙ্গি যোগ করে হাসাতেন তার পাঠকদের। এটি ছড়াকার সুকুমার রায়ের এক অতুলনীয় গুণ। আমাদের ছড়াসাহিত্যে এই ধারার উপস্থিতি খুব কম। এই অনুপস্থিতির মধ্যেও আমরা একজন ছড়াকারকে পাই কথায় কথায় ছড়া কাটতে। ছড়ায় ছড়ায় হাসাতে। ছড়ায় রঙ্গব্যঙ্গ ছড়াতে। আর কে এই ছড়াকার। আলম তালুকদার। তাঁর নামের সঙ্গে ছড়াকার শব্দের চমৎকার অন্ত্যমিল কাজ করে। তিনি নিজেও অন্ত্যমিলের মানুষ। অন্ত্যমিল ছাড়া কথা বলতে চান না তিনি। সভায়, আড্ডায়, কথাবার্তায়, বাক্য বিনিময়ে অন্ত্যমিল দিয়ে কথা বলেন একনাগাড়ে। আর এই কথাগুলো সরল, সহজবোধ্য, অর্থবহ হাস্যরস মিশ্রিত। আলম তালুকদারের এই পরিচিতির প্রতিফলন ঘটেছে তার বিশাল ভাণ্ডারের ছড়াগ্রন্থে।
হঠাৎ করেই এই ছড়াকার আমাদের কাঁদালেন। কান্নার ছড়া লিখে নয়। কান্নার ছন্দ দিয়ে নয়। কোনো দুঃখের গল্প করে নয়। একবারে নিজে চিরদিনের জন্য পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে। তিনি কাঁদালেন কিন্তু তিনি দেখতে পেলেন না তাঁর পাঠক-শ্রোতারা কাঁদছে। যারা তাঁর সান্নিধ্যে এসে শুধু হাসতে অভ্যস্ত ছিল। ছড়া দিয়ে নয়, ছড়াকার বিদায়ে হাত নাড়িয়ে তার পাঠকদের কাঁদালেন। মনে হয় এটি একবারই ঘটল। আমরা কখনো যাঁকে বেজার মুখে দেখিনি। তাঁকে কখনো হাসিমুখ ছাড়া দেখিনি। আমরা প্রতিনিয়ত তাঁকে দেখেছি ফান করতে। কৌতুক করতে। ছন্দে ছন্দে হাসি ফোটাতে। আমাদের শিশুসাহিত্যে, ছড়াসাহিত্যে আলম তালুকদারের এই চলে যাওয়া অপূরণীয় একটি ছন্দপতন।
আলম তালুকদার ছড়া এমনকি গদ্যচর্চায় যে ধারাটি তৈরি করেছিলেন, সেটি খুবই প্রত্যাশিত। বিশেষ করে ছোটদের জন্য লেখায়। তাঁর প্রথম গ্রন্থ থেকেই সেটি দেখতে পাই। শতাধিক গ্রন্থের প্রণেতা আলম তালুকদারের প্রথম বই ‘ঘুম তাড়ানো ছড়া’। শুধু হাসি-তামাশা দিয়ে নয়, ছন্দ দিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়াদের জাগিয়েও তোলার চেষ্টা করেছেন সেই প্রথম থেকে। এই গ্রন্থের নামে আমরা দেখতে পাচ্ছি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মানুষকে জাগিয়ে তোলার মন্ত্র, অলসতা পরিহারের আহ্বান, আপসকামিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার উচ্চারণসহ তাঁর সাহিত্যে সেই শুরু থেকেই মানুষকে দেশের জন্য এগিয়ে যাবার উদাত্ত আহ্বান। আর সেটি হবেই বা না কেন, আলম তালুকদার যে ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।
ছড়াগ্রন্থ ‘আবার আবোল-তাবোল’-এর মধ্যে যদি যদি প্রবেশ করি, আমরা দেখব সেই ধারা। সুকুমার রায়ের আজগুবি ও উদ্ভট ছড়ার সংকলন হচ্ছে ‘আবোল তাবোল’। এই পৃথিবীতে যা কিছু সম্ভব নয়, সুকুমার রায় তাই করেছেন এই ছড়াগ্রন্থে। এ কারণেই রসবোধে ভরে উঠেছে প্রতিটি ছড়া সুকুমার রায়ের ‘আবোল-তবোল’ ছড়াগ্রন্থে। সুকুমার রায়ের এই ধারাটি নিজের মতো করে আবিষ্কার করলেন আলম তালুকদার তাঁর ‘আবার আবোল-তাবোল’ গ্রন্থে। একইরকম রসবাধ সৃষ্টিতে আলম তালুকদার এখানে নানা আজগুবি এবং অবাস্তব ঘটনার অবতারণা করেছেন। সুকুমার তাঁর ‘খিচুড়ি’ ছড়ায় বলেছেন, ‘হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না)/হয়ে গেল ‘হাসজারু’ কেমনে তা জানি না। আর আলম তালুকদার তাঁর ‘ব্যাকরণ মানিব’ ছড়ায় বলেছেন, ‘হাঁস ভালো সাঁতারু (ব্যাকরণ মানিব)/হতে পারে হাসাহাসি (কেমনে তা জানিব)’। কিছু বিখ্যাত ছড়ার কাঠামো অনুকরণ করে তিনি তাঁর মতো তাতে অর্থ ও রঙ্গ সন্নিবেশ করেছেনÑযেমন ‘বাসনা চুরি ছড়ায়’Ñ‘আর নয় নাই ভয় আরে বেটা আস না/হাওয়া হয়ে উড়ে যাবি বিশ্বাস পাস না?’ আবার কল্পনার রাজ্যেও ভ্রমণ করেছেন আলম তালুকদার তাঁর কিছু কিছু ছড়ায়। যেমন: চাঁদের ফালি দুলছে ছড়ায়, ফুলবাগানে কদম আলী/দেখতে পেল চাঁদের ফালি/ফুলের সাথে দুলছে/ফুলের সাথে ভুল না করে/চাঁদের ফালি তুলছে।
রসাত্মক ছড়াগুলোর মধ্যে আছে, আ বলো তা বলো, মাত্র কত বার, হ য ব র ল, খিচুড়ি, মশা মাছি দ্বীপান্তর, মাথায় যত প্রশ্ন আসে, ভয় পাচ্ছি গুঁতুকে, সুমেরু কুমেরু, গোঁফ রাখা খুব সোজা না, গোবর গনেশ, দুই কদমে চলি নাই। ছড়ার এরকম নাম শুনলেই বোঝা যায় এতে হাসি আছে।
আলম তালুকদারের ‘আবার আবোল তাবোল’ বইটি পড়ে অবশ্যই হাসতে হবে। আর ছড়ার রস এমন করে কাতুকুতু দেবে যে ঘুমের ঘোরেও হাসতে হবে। এ নিয়ে কিন্তু কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। কারণ আলম তালুকদার তাঁর ‘প্রমাণ দাও’ ছড়াতে বলেছেন, ‘মাথায় যদি এমন প্রশ্ন আসতে পারে, ঘুমিয়ে গেলে কারা বলো হাসতে পারে?’ আলম তালুকদারের ছড়া পড়লে ঘুমেও হাসতে হবে।
তাঁর ছড়া কতটা কৌতুকধর্মী সেটি ছড়াগ্রন্থের নামেও প্রতিফিলিত। কয়েকটি গ্রন্থের নাম দেখলেই সেটি বোঝা যাবে। যেমন: খোঁচান ক্যান, ঐ রাজাকার, বাচ্চা ছড়া কাচ্চা ছড়া, ছড়ায় ছড়ায় টক্কর, প্যাচাল না আলাপ, শিষ্টামি, ছড়া পড়লে চুল পাকে না।
ছড়াসহ আমাদের শিশুসাহিত্যে এরকম একটি হাসি-ঠাট্টা-কৌতুকের মতো যে জগৎ তৈরি করে যাচ্ছিলেন ছড়াকার আলম তালুকদার, সেটি থেমে গেল হঠাৎ। আর আলম তালুকদার এসে বলবেন না, লেখালেখির বিষয় নিয়ে লেখক এখন চিন্তিত/সরকার যদি বিনামূল্যে কাগজ কলম পিন দিত/লেখালেখির লেখক কভু/হতো না আর নিন্দিত।
পরকালে ভালো থাকুন ছড়াকার আলম তালুকদার।

আলম তালুকদার: প্রাণবন্ত মানুষের প্রস্থান
হুমায়‚ন কবীর ঢালী

‘চীন হতে করোনার ভাইরাস আসে
পৃথিবীর দেশে দেশে যমদ‚ত হাসে
ভ্যাকসিন আসে নাই মানুষেরা ত্রাসে
মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে প্রতি মাসে।’
খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলম তালুকদারের ছড়া থেকে চারটি লাইন। করোনাকালে তিনি লিখেছিলেন এই ছড়াটি। লেখার মাত্র কদিনের মাথায় তাঁর জীবনেই সত্য হয়ে দেখা দিলো ছড়ার মর্মার্থ। করোনা নামক যমদূত তাঁকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে গেল ৮ জুলাই ২০২০ বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায়। এইদিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সন্ধ্যায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জাতীয় পতাকায় মুড়ে গার্ড অব অনার ও বিউগলের করুণ সুর বাজিয়ে সমাহিত করা হয় মুক্তিযোদ্ধা, ছড়াকার-শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদারকে।
আলম তালুকদার ১৯৫৬ সালের ০১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার গালা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মা শহরবানু, বাবা সোহরাব তালুকদার। শৈশব কেটেছে গ্রামে। মাত্র পনের বছর বয়সে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। রণাঙ্গনের যোদ্ধা আলম তালুকদার নিজেকে পরিচয় দিতেন ‘অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে।
১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের মাধ্যমে চাকরিতে যোগ দেন।
যে মানুষটি প্রতিনিয়ত সবাইকে ছন্দে-আনন্দে ভরিয়ে তুলত সে মানুষটি সবাইকে বেদনার সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেল অচেনা দেশে। এটি ভাবতে বুক ভারি হয়ে ওঠে। চোখ ভিজে আসে। কী বোর্ডে আঙুল স্থির হয়ে যায়। কী লিখব কিছুই ভেবে পাই না। বেঁচে থাকতে গুরুগম্ভীর সাহিত্যসভাকে আনন্দসভায় পরিণত করতেন তিনি। শত মানুষের ভিড়ে স্বাচ্ছন্দে দিয়ে ছড়ায় ছড়ায় চমকে দিতেন। ছড়া অন্তঃপ্রাণ আলম তালুকদার ছিলেন প্রচÐ আড্ডাবাজ আর রসিক। পান ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। জীবন ছিল কৌতুকপ্রধান, হাস্যমুখর ও প্রাণশক্তিতে ভরপুর। তাঁর পান খাওয়া নিয়েও মজার বাক্য বর্ষণ করতেন। বলতেন, আমি পানাহার করি। তাৎক্ষণিক মুখে মুখে ছড়া বলে সর্বত্র হাসি আর আনন্দের জোগান দিতেন যখন-তখন। শুধু রস নয়, সমাজের অসঙ্গতিগুলোকে চিহ্নিত করতেন ছড়ার ছন্দে। সব বিষয় নিয়েই তিনি লিখেছেন। মাঝেমধ্যে তাঁর ছড়া শৈল্পিক কারণে কবিতায় পরিণত হয়েছে। ছড়ার পাশাপাশি রস-রচনায় ছিলেন তিনি দক্ষ ও চৌখস। সমাজের নানা অসঙ্গতি ও অব্যবস্থা নিয়ে নিয়মিত রম্যরচনা লিখেছেন।
শিল্পসাহিত্যের মানুষজনের কাছে তিনি আলম তালুকদার নামে পরিচিত থাকলেও তাঁর একাডেমিক নাম ছিল মো. নুর হোসেন তালুকদার। ছিলেন সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব। কর্মজীবনে সরকারের গুরুত্বপ‚র্ণ পদ ও দায়িত্ব পালন করেন। একাধিক জেলার প্রশাসক, বেগম সুফিয়া কামাল গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিবার পরিকল্পনার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরির মেয়াদ শেষে সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে ২০১৬ সালে অবসর নেন।
অবসর জীবনেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রাইম ইউনিভার্সিটিতে ছিলেন। সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপ‚র্ণ দায়িত্বে থাকার পরও তাঁর বিচরণ ছিল অতি সাধারণ এবং সর্বজনসাহচর্যকেন্দ্রিক। তবে রাজাকারদের সাথে তাঁর আপস ছিল না। মঞ্চের বক্তৃতা শেষ করতেন এই বলে, ‘রাজাকারকে দিয়া বাদ, সবাইকে ধন্যবাদ’।
একজন নির্লোভ, সহজ-সরল প্রাণ, বইপ্রেমি মানুষ ছিলেন আলম তালুকদার। আমলা হিসেবে কখনোই পরিচয় দিতেন না। নিজেকে একজন শিল্পসাহিত্যের মানুষ হিসেবেই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। শিল্পসাহিত্যের আহŸান কখনো পরিত্যাগ করেছেন, এমন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বই নিয়ে তাঁর ¯েøাগান ছিল, ’পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই’। এতেই বুঝা যায়, বইয়ের প্রতি ভালোবাসা কতটা তাঁকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে আমার গ্রাম সিকিরচরে একটি পাঠাগার স্থাপন করি। তখন আলম ভাই পাবলিক লাইব্রেরির মহাপরিচালক। তাঁকে বললাম, আমার গ্রামে একটা পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছি। ৩০ অক্টোবর উদ্বোধন। ঢাকা থেকে অনেকেই যাবেন, আপনাকেও যেতে হবে। তিনি তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বললেন, আরে কন কী! আপনার গ্রামে পাঠাগার দিছেন, আর আমি যাবো না, এটা কী করে ভাবলেন! এরপর বললেন, আর কে কে যাচ্ছে? আমি বললাম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, নিসর্গী বিপ্রদাশ বড়ুয়া, শিক্ষাবিদ ড. সফিউদ্দিন আহমেদ, প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রæব এষ, শিশুসাহিত্যিক আশরাফুল আলম পিনটু প্রমুখ। আলম তালুকদার নামগুলো শুনে বললেন, গুড চয়েজ। ঠিকানা বলেন। আমি টাইম মতো হাজির থাকব।
সেদিন ঠিকই আলম তালুকদার আমাদের পাঠাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। ঢাকাতেও শিশুসাহিত্যিক ফোরামের সকল অনুষ্ঠানে আলম তালুকদার যথাসময়ে হাজির থাকতেন। আলম তালুকদার বাংলাদেশ শিশুসাহিত্যিক ফোরামের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
তিনি ছিলেন আপাদমস্তক শিল্পসাহিত্যের অন্তপ্রাণ একজন মানুষ। আড্ডাবাজ তো বটেই। আজিজ সুপার মার্কেট, পাঠক সমাবেশ, কাঁটাবন ছিল তাঁর আড্ডা ও বিচরণের প্রিয় জায়গা।
শিশু সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় তার স্বাভাবিক এবং স্বতঃস্ফ‚র্ত বিচরণ ছিল। তাঁর লেখালেখির শুরু ১৯৬৮ সালে দেওয়াল পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে। এরপর তাঁর কলম থেমে থাকেনি কখনো। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১২০টি। তাঁর প্রথম বই ‘ঘুম তাড়ানো ছড়া’ প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছড়ার বইগুলো হচ্ছে, ‘খোঁচান ক্যান’, ‘চাঁদের কাছে জোনাকি’, ‘ডিম ডিম ভুতের ডিম’, ‘ঐ রাজাকার’, ‘যুদ্ধে যদি যেতাম হেরে’, ‘বাচ্চা ছড়া কাচ্চা ছড়া’, ‘ছড়ায় ছড়ায় আলোর নাচন’, ‘জাদুঘরের ছড়া’, ‘ছড়ায় ছড়ায় টক্কর’, ‘আকাশ ভরা তারার ছড়া’, ‘ছড়াসমগ্র’ প্রভৃতি। গল্পের বইগুলো হচ্ছে, ‘মহাদেশ বাংলাদেশ উপদেশ’, ‘শিশুদের শিশুটামি’, ‘অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’, ‘নাই দেশের রূপকথা’, ‘ভুতের সঙ্গে ভুত আমি’, ‘কিশোরসমগ্র’, ‘গল্পসমগ্র’ প্রভৃতি।
আলম তালুকদার ‘চাঁদের কাছে জোনাকি’ ছড়ার বইয়ের জন্য ২০০০ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কারে ভ‚ষিত হন। এছাড়া পালক অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৬, চোখ সাহিত্য পুরস্কার ২০০০, জসীম উদদীন পুরস্কার ২০০১, কবি কাদির নওয়াজ পুরস্কার ২০০৪, স্বাধীনতা সংসদ পুরস্কার ২০০৬, অলোক আভাষ সাহিত্য পত্রিকা পুরস্কার ২০০৬, শিল্পাচার্য জয়নুল পুরস্কার ২০০৮, সাহস সম্মাননা ২০১০, ফুটতে দাও ফুল সম্মাননা পদক ২০১১ প্রভৃতিতে ভ‚ষিত হন।
ভেবে অবাক ও বেদনাহত হই, মৃত্যুর একদিন আগেও তিনি ফেসবুকে ছড়া ও ছবি পোস্ট করেছেন। পত্রিকায় লেখা পাঠিয়েছেন। আমাদের শিল্পসাহিত্যে তাঁর অন্তর্ধানে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো, তা কখনো প‚রণ হবার নয়। আলম তালুকদার এক এবং অনন্য।
সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত, আড্ডাবাজ মানুষ আলম তালুকদার আর কখনো আড্ডার মধ্যমণি হবেন না। আর কখনো মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথার ফুলঝুরিতে, ছন্দের তুড়িতে উপস্থিত কবি-সাহিত্যিক তথা দর্শক-শ্রোতাদের চিত্ত চৈতন্যে ভরে দেবেন না। বেদনাদায়ক হলেও এখন এটিই চির সত্য। চির বাস্তব।

হাসির রাজা আলম ভাই
শিবুকান্তি দাশ

‘পড়িলে বই আলোকিত হই,
না পড়িলে বই অন্ধকারে রই’
আলম তালুকদার
আলম ভাই চলে গেলেন। আমাদের প্রিয় শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদার। হঠাৎ করেই চলে গেলেন। কেন ? উনার এত তাড়া কিসের ছিল। ৭ জুলাই বিকেলে উনি আমাকে সংকলনের জন্য শেখ রাসেলের উপর একটি ছোট্ট ছড়া ইনবক্সে পাঠিয়ে ফোন দিলেন।
{রাসেল শিশুর আলোর খাতা
আলম তালুকদার
রাসেল মানে অনেক কথা
রাসেল শিশুর স্বাধীনতা
ইতিহাসের করুণ গাথা
অশেষ আশার বিশাল ছাতা
সোনার বাংলার স্বপ্ন -পাতা
রাসেল শিশুর আলোর খাতা!}
আমি ফোন রিসিভ না করে আমার অফিসের ফোন থেকে ব্যাক করি। উনি ধরেই বললেন, শিবু নাকি ? হ্যাঁ আলম ভাই। ‘শিবুকান্তি দাশ একটা ইতিহাস’ বলেই হা হা হা। আমি জবাবে বলি শিবুকান্তি দাশ,কাটে ঘোড়ার ঘাস। তিনি আবার দম ফাটানো একটি হাসি দিয়ে বললেন, শোন, আমার লেখার সাথে আরেকজনের একটি লেখা দিচ্ছি, তোমার ভালো লাগবে। দেখো। লোকটা ইশকুলের শিক্ষক। জ্যোতির্ময় সেন। তিনি আবার বললেন, সেন কি ব্রাক্ষণ নাকি ? না না শুদ্র। ও ! শুদ্র নাই তার ছিদ্র। হা হা হা। দুইজনেই হাসতে হাসতে আরো কিছু কথা অতপর ফোনটা রাখলাম। এই হচ্ছে আলম ভাই। তিনি হাসাতে ওস্তাত ছিলেন। যে কোন পরিবেশে তিনি নিজেই নিজের আসন গড়ে নিতেন নিজের স্বাভাব সুলভ গুনে।
আলম ভাই পেশাগত জীবনে সরকারের অতিরিক্ত সচিব পদে ছিলেন। গণগ্রন্থাগারের পরিচালক সহ নানা সরকারী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চলনে বলনে আচার আচারনে একজন খাঁটি বাঙালি। তিনি সরকারী গাড়ি পেয়েও কম ব্যবহার করতেন। তিনি সাহিত্যের নানা অনুষ্টানে যেতেন নিজের মতো করে। সরকারী গাড়ি ব্যবহারে নয়। এ প্রসঙ্গে একবার বলছিলেন, দেখো সরকারী গাড়ি অফিসের জন্য। অফিস শেষে আমার আড্ডার আসরে সরকারী গাড়িতে যাব কেন ? আর সরকারী গাড়িতে চড়ে সাহিত্যের আড্ডায় বা অনুষ্টানে গেলে আমলা আমলাই মনে হয়, আমি হলাম সাধারন লেখক। আমাকে আমলাগীরি দেখালে চলে ? এমন মানুষ কোথায় মিলবে বলুন তো। এতেই বুঝা যায় তিনি কতটা সহজ সরল।
পান ছিলো আলম ভাইয়ের প্রিয় একটি খাদ্য। সব সময় মুখে পান। অনুষ্টানে বসে বসে পান খেতেন। সঙ্গে পান রাখতেন। মুখটা সবসময় লাল হয়ে থাকতো টিয়ে পাখির ঠোটের মতো। চোখে চশমা। মুখে গোফ। টাক না থাকলেও টাকের মতো। মাথায় সামনের দিকে চুল ছিল না। কিন্তু দেখতে সুুপুরুষ।
পূর্বকোণ ঢাকা অফিসে শিশুসাহিত্য ‘সারথি’ প্রকাশে আনন্দ আড্ডার আয়োজন থাকতো নিয়মিত। তাছাড়া বরণ্য শিশুসাহিত্যিকদের জন্মদিনকে ঘিরে সারথির উদ্দ্যেগে নানা আনন্দ আয়োজনে আলম ভাই হাজির থাকতেন।
আলম ভাইয়ের সাথে কত যে স্মৃতি। কোন টা রেখে কোনটা বলি। আমাদের প্রিয় শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়–য়া যেবার বাংলা একডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন।সম্ভবত ২০১৫ সালে। চট্টগ্রামে বিশাল সংবর্ধনা অনুষ্টানের আয়োজন করলেন রাশেদ রউফ ভাইরা। আমি সুজন দা, আলম ভাই, আখতার হুসেন ভাই ও মুস্তাফা মাসুদ ভাই। এক সাথে রাতের ট্রেনে চট্টগ্রাম যাচ্ছি। পাশাপাশি সিট। কমলাপুর ষ্টেশনে যখন পৌঁছি আলম ভাই বললেন, শিবু রাতের জন্য হালকা কিছু নিও। সারারাত চলবে নাকি ? মৃদু হেসে ঈগিত দিলেন,চলবে মানে ! আমি পানি,বিস্কুট,চনাচুর এটা সেটা নিয়ে নিলাম। ট্রেন ছাড়ার পর থেকে আলম ভাই তাঁর আসর শুরু করে দিলেন। অনেক রাত পর্যন্ত আলম ভাই আমাদেরকে জাগিয়ে রেখে হাসির রসদ জুগিয়েছেন। সারা ট্রেনে কোন সাড়া শব্দ নেই। আলম ভাই সুজনদার পাশে বসে ফিস ফাস করেই চলছেন। আমি সহ অন্যরা কবে ঘুমিয়েছি টের পাইনি। সকালে ট্্েরন থামার পর ঘুম ভাঙ্গে। তখনও আলম ভাই তাঁর এফ এম এফ বাজিয়ে চলছেন। সুজনদা তখন একটু যেনো ঘুমের ঘোরে।
আলম ভাই লেখালেখি করতেন নিজস্বতা নিয়ে। শিশুসাহিত্য চর্চায় ছিল প্রধান। তাঁর লেখায় হাসির খোরাক থাকতোই। তিনি পত্রিকায় উপম্পাদকীয়ও লিখতেন। এ লেখা গুলো ছিল রঙ্গরসে ভরা। ১৯৮৯ সালে তাঁর প্রথম ছড়ার বই ‘ঘুম তাড়ানোর ছড়া’ প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্যযোগ্য বইয়ের মধ্যে,ছড়ায় ছড়ায় আলোর নাচান, নাই দেশের রুপকথা। ‘চাঁদের কাছে জোনাকি’ বইটির জন্য তিনি ‘অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল পুরস্কার, চোখ সাহিত্য পুরস্কার সহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। ২০১৬ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন।
গত ৮ জুলাই সর্বনাশা করোনা তাঁকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। অথচ বাসা থেকে আগের দিন পায়ে হেঁটে হাসাপতালে গেলেন লোকটা। ২৪ ঘন্টা না যেতেই ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে। আসুন সবাই তাঁর পরলোকিক শান্তি কামনা করি।

শেয়ার করুন ..

Comments are closed.




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge